December 22, 2024, 9:22 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন
অনেকটা ঢাকাই সিনেমার মতোই ঘটনাটি। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে প্রেমিক। খবর শুনে হয় ছুটে আসবে নয়তো কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে পড়বে প্রেমিকা। অনেক ক্ষেত্রে বাধ সাধবে প্রেমিকার বাবা। ক্ষেত্র বিশেষে বিদ্রোহ করবে প্রেমিকা। এক কাপড়েই ঘর থেকে বেড়িয়ে আসবে। চলে যাবে প্রেমিকের কাছে। সেখানেই বিয়ে। এমন সিনেমা হরহামেশাই চোখে পড়ে।
এমন একটি ঘটনা বাস্তবে ঘটতে দেখা গেল চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় ফাতেমা ক্লিনিকে বৃহস্পতিবার রাত ১ টার দিকে। আজ শুক্রবার সকালে বিষয়টি পুরো আলমডাঙ্গায় জানাজানি হবার পর নব দম্পত্তিকে এক নজর দেখার জন্য ওই ক্লিনিকে ভীড় জমান মহল্লার অনেকেই।
প্রেমিকের পারিবারিক সূত্রে জানা গেল হুসাইন আহমেদ আলমডাঙ্গা উপজেলার চরপাড়া গ্রামের আব্দুস সোবহানের ছেলে। হুসাইন ঢাকার একটি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তার প্রেমিকা তাসফিয়া সুলতানা মেঘার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার লেবুতলা গ্রামে। সে ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছে। তাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেম সম্পর্ক রয়েছে।
কয়েকদিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় তার ডান পা ভেঙ্গে গেছে হুসাইনের। আলমডাঙ্গার ফাতেমা ক্লিনিকের ৪ নং কেবিনে ভর্তি রয়েছে সে। সাথে রয়েছেন তার মা-বাবা ও বোন। দুর্ঘটনায় কথা শুনে বাড়িতে কাউকে কিছু না বলে তাকে দেখতে বৃহস্পতিবার বিকেলে সেই ঝিনাইদহ থেকে ক্লিনিকে ছুটে আসে মেঘা।
হুসাইনের বাবা দিলদার প্রকৃতির মানুষ। ঘটনা শুনে তিনি মেঘার বাবার সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। বিষয়টি জানার পর মেঘার বাবা মেয়েকে বাড়িতে তুলে নিতে আর রাজি হননি। মেঘার বাবা বলেছেন, মেয়ে একবার যখন ঘর থেকে বের হয়ে গেছে ওই মেয়ে আর ঘরে তুলবেন না। সম্ভব হলে বিয়ে দিয়ে দেবার পরামর্শ দেন তিনি।
প্রেমিকা মেঘা জানান, বাবার কথা শুনে মেঘাও বিয়ে করতে রাজি হয়ে যায়। কারন সে হুসাইনকে খুব ভালবাসি। তাকে ছাড়া সে বাঁচবে না। এক পর্যায়ে তাদের বিয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। গভীর রাতে হাসপাতালের কেবিনেই কাজী ডেকে তাদের বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর ওই কেবিনেই তাদের বাসর হয়।
এ কাজে পূর্ণ উৎসাহ নিয়ে আয়োজন করে দেন ফাতেমা ক্লিনিকের মালিক মুনজুর আলী। তিনি বলেন, ছেলের বাবা আব্দুস সোবহান তার বাল্য বন্ধু। বন্ধুর ইচ্ছাতে তার ছেলের বিয়ে আমার ক্লিনিকে হয়েছে। ক্লিনিকে এরকম একটা বিয়ে হয়েছে এ জন্য তার ভাল লাগছে বলে জানান।
আলমডাঙ্গা পৌর শহরের ঐ এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক রহমান মুকুল জানান শুক্রবার সকালে ক্লিনিকের কেবিনে বিয়ের বিষয়টি পুরো আলমডাঙ্গায় জানাজানি হয়। খবরটি শোনার পর মহল্লার অনেকেই নব দম্পত্তিকে এক নজর দেখার জন্য ক্লিনিকে ভীঁড় জমাচ্ছেন। আসছেন ছেলে পক্ষের আত্মীয় স্বজনরাও।
Leave a Reply